পরিমাপের পদ্ধতি: ভৌত রাশি, রাশির একক ও পরিমাপক যন্ত্র

ভৌত রাশি 

যেসব প্রাকৃতিক বিষয়কে পরিমাপ করা যায় এবং যার সাহায্যে পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রাবলী প্রকাশ করা যায়, তাকে ভৌত রাশি বলে। যেমন: দৈর্ঘ্য, ভর, সময়, উষ্ণতা, বল, ক্ষেত্রফল ইত্যাদি।


অভিমুখ অনুসারে ভৌত রাশির প্রকারভেদ:

​অভিমুখ বা দিকনির্দেশের ওপর ভিত্তি করে ভৌত রাশিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:

​1. স্কেলার রাশি

  • সংজ্ঞা: ​যেসব ভৌত রাশিকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করার জন্য কেবলমাত্র মান-এর প্রয়োজন হয়, কিন্তু কোনো অভিমুখের প্রয়োজন হয় না, তাদের স্কেলার রাশি বলে।
  • উদাহরণ: দৈর্ঘ্য, ভর, সময়, উষ্ণতা, কার্য, শক্তি, দূরত্ব, আয়তন ইত্যাদি।

2. ভেক্টর রাশি

  • সংজ্ঞা: ​যেসব ভৌত রাশিকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করার জন্য মান এবং অভিমুখ উভয়েরই প্রয়োজন হয় এবং যারা ভেক্টর বীজগণিতের নিয়ম মেনে চলে, তাদের ভেক্টর রাশি বলে।
  • উদাহরণ: সরণ, বেগ, ত্বরণ, বল, ভরবেগ, ওজন ইত্যাদি।


ভৌত রাশির একক

কোনো ভৌত রাশি পরিমাপ করার জন্য, সেই রাশির একটি নির্দিষ্ট ও সুবিধাজনক পরিমাণকে আদর্শ মান হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। এই আদর্শ মানটিকে সেই রাশির একক বলে।


এককের প্রকারভেদ

গঠন অনুসারে ভৌত রাশির একক গুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়: 

1. মৌলিক একক 

  •  সংজ্ঞা: ​মৌলিক রাশি পরিমাপের জন্য যে এককগুলি ব্যবহার করা হয়, এবং যেগুলি অন্য কোনো এককের উপর নির্ভরশীল নয়, তাদের মৌলিক একক বলে। এগুলি স্বাধীন এবং নিজেরাই নিজেদেরকে প্রকাশ করতে পারে।
  • উদাহরণ: দৈর্ঘ্যের একক মিটার, ভরের একক কিলোগ্রাম, সময়ের একক সেকেন্ড ইত্যাদি।

2. লব্ধ একক

  • সংজ্ঞা: ​লব্ধ রাশি পরিমাপের জন্য যে এককগুলি ব্যবহার করা হয়, এবং যেগুলি একাধিক মৌলিক এককের গুণ বা ভাগের মাধ্যমে গঠিত, তাদের লব্ধ একক বলে।
  • উদাহরণ: ক্ষেত্রফলের একক বর্গমিটার, বেগের একক মিটার/সেকেন্ড ইত্যাদি।


মৌলিক এককের বিভিন্ন পদ্ধতি 

পদার্থবিজ্ঞানে ভৌত রাশির মৌলিক এককের মূলত চারটি পদ্ধতি রয়েছে:

1. C.G.S পদ্ধতি (Centimetre-Gram-Second System):

​এটি ফরাসি বা মেট্রিক পদ্ধতি নামেও পরিচিত। এই পদ্ধতিটি প্রধানত বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ও তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যায় জনপ্রিয় ছিল। এই পদ্ধতিতে কয়েকটি রাশির একক হলো:

দৈর্ঘ্যের একক: সেন্টিমিটার (cm)

ভরের একক: গ্রাম (g)

সময়ের একক: সেকেন্ড (s)

  • সুবিধা: এই পদ্ধতিতে ছোট এককগুলি ব্যবহার করায় অনেক বৈজ্ঞানিক গণনা সহজসাধ্য হয়। এই পদ্ধতিটি দশমিক ভিত্তিক  হওয়ায় রূপান্তর করা সুবিধাজনক।
  • অসুবিধা: এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে বিভিন্ন লব্ধ একক, যেমন বলের একক (ডাইন), তাপের একক (ক্যালরি) ইত্যাদি, ব্যবহারিক ক্ষেত্রে খুব ছোট হয়ে যায়, যা বৃহৎ পরিমাপের জন্য উপযুক্ত নয়।

​2. F.P.S পদ্ধতি (Foot-Pound-Second System):

​এটি ব্রিটিশ বা ইংরেজ পদ্ধতি নামে পরিচিত। এটি মূলত ব্রিটিশ কমনওয়েলথ দেশগুলোতে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং দৈনন্দিন পরিমাপে ব্যবহৃত হতো। এই পদ্ধতিতে কয়েকটি রাশির একক হলো:

দৈর্ঘ্যের একক: ফুট (ft)

ভরের একক: পাউন্ড (lb)

সময়ের একক: সেকেন্ড (s)

  • অসুবিধা: এই পদ্ধতির এককগুলি দশমিক ভিত্তি মেনে চলে না (যেমন, 1 ফুট = 12 ইঞ্চি; 1 পাউন্ড = 16 আউন্স)। ফলে এক একক থেকে অন্য এককে রূপান্তর করা তুলনামূলকভাবে কঠিন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এটি এখন প্রায় অপ্রচলিত।

​3. M.K.S পদ্ধতি (Metre-Kilogram-Second System):

​এটি C.G.S পদ্ধতির একটি বৃহত্তর রূপ। এটি ব্যবহারিক প্রকৌশল এবং প্রয়োগকৃত পদার্থবিজ্ঞানে বিশেষ সুবিধা দিত। পরবর্তীকালে এটিই আন্তর্জাতিক SI পদ্ধতির ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। এই পদ্ধতিতে কয়েকটি রাশির একক হলো:

দৈর্ঘ্যের একক: মিটার (m)

ভরের একক: কিলোগ্রাম (kg)

সময়ের একক: সেকেন্ড (s)

  • সুবিধা: C.G.S এর চেয়ে বৃহত্তর একক ব্যবহার করায় এটি বৃহৎ ও ব্যবহারিক পরিমাপের জন্য অধিক উপযোগী। এটিও দশমিক ভিত্তি মেনে চলে।

​4. SI পদ্ধতি (Systeme Internationale d'Unites):

​M.K.S পদ্ধতির আরও বিস্তৃত ও আধুনিক সংস্করণ হলো SI পদ্ধতি, যা বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত। এই পদ্ধতিতে কেবল দৈর্ঘ্য, ভর ও সময় নয়, মোট ৭টি মৌলিক রাশি-কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

​SI পদ্ধতির ৭টি মৌলিক একক হলো:

ভৌত রাশি SI এককের নাম এককের প্রতীক
দৈর্ঘ্য মিটার m
ভর কিলোগ্রাম kg
সময় সেকেন্ড s
তড়িৎ প্রবাহ অ্যাম্পিয়ার A
তাপমাত্রা কেলভিন K
আলোক দীপ্তি ক্যান্ডেলা cd
পদার্থের পরিমাণ মোল mol

  • SI পদ্ধতির গুরুত্ব: এই পদ্ধতি, বৈজ্ঞানিক তথ্য ও প্রযুক্তি বিনিময়ের জন্য সারা বিশ্বে একটি অভিন্ন ভাষা তৈরি করেছে, যা আন্তর্জাতিক স্তরে পরিমাপের ক্ষেত্রে সমতা এবং নির্ভুলতা নিশ্চিত করে।

 

পরিমাপক যন্ত্রসমূহ 

বিভিন্ন ভৌত রাশিকে সঠিকভাবে পরিমাপ করার জন্য পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় সুনির্দিষ্ট যন্ত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এদের কার্যকারিতা ও ব্যবহারের ক্ষেত্র অনুসারে নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রের বিবরণ দেওয়া হলো:


দৈর্ঘ্যের পরিমাপ:

দৈর্ঘ্য পরিমাপের ক্ষেত্রে, পরিমাপের নির্ভুলতার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে স্কেল থেকে শুরু করে ভার্নিয়ার স্কেল ও স্ক্রু গেজের মতো অত্যন্ত সূক্ষ্ম পরিমাপক যন্ত্র রয়েছে।


​1. মিটার স্কেল:


scale

​এটি দৈর্ঘ্য পরিমাপের সবচেয়ে সাধারণ এবং প্রাথমিক যন্ত্র।

  • কার্যকারিতা: সরল দূরত্ব, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা ইত্যাদি পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • নির্ভুলতা: সাধারণ মিটার স্কেল সাধারণত মিলিমিটার (mm) পর্যন্ত বা এর লঘিষ্ঠ ধ্রুবক 1 mm পর্যন্ত নির্ভুলভাবে পরিমাপ করতে পারে। অর্থাৎ মিটার স্কেলের সাহায্যে আপনি 1 mm-এর চেয়ে ছোট কোনো দৈর্ঘ্য নির্ভুলভাবে পরিমাপ করতে পারবেন না।
  • ব্যবহার: দৈনন্দিন জীবনে এবং সাধারণ পরীক্ষাগারে প্রাথমিক পরিমাপের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।

​2. ভার্নিয়ার স্কেল বা ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স:

​এটি মিটার স্কেলের চেয়ে অনেক বেশি সূক্ষ্মভাবে দৈর্ঘ্য পরিমাপ করতে পারে।

  • গঠন: এই যন্ত্রে একটি মূল স্কেল থাকে এবং তার সাথে থাকে স্লাইড করতে পারা একটি ছোট ভার্নিয়ার স্কেল
  • কার্যকারিতা: এটি সাধারণত নলাকার বস্তুর ভেতরের ব্যাস, বাইরের ব্যাস, এবং গভীরতা পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • নির্ভুলতা: ভার্নিয়ার স্কেলের লঘিষ্ঠ ধ্রুবক সাধারণত 0.1  mm বা 0.01 cm হয়, যা সাধারণ স্কেলের তুলনায় 10 গুণ বেশি সূক্ষ্ম।

3. স্ক্রু গেজ:

​এটি সবচেয়ে সূক্ষ্ম দৈর্ঘ্য পরিমাপক যন্ত্রগুলোর মধ্যে একটি, যা ভার্নিয়ার স্কেলের চেয়েও বেশি নির্ভুল।

  • গঠন: এটি একটি 'U' আকৃতির ফ্রেম নিয়ে গঠিত, যার এক প্রান্তে একটি স্ক্রু থাকে। স্ক্রুটির ঘূর্ণনের মাধ্যমে পরিমাপ করা হয়।
  • কার্যকারিতা: এটি সরু তারের ব্যাস, পাতলা ধাতব বা কাগজের পাতের বেধ, ছোট গোলকের ব্যাস ইত্যাদি অত্যন্ত সূক্ষ্ম পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • নির্ভুলতা: স্ক্রু গেজের লঘিষ্ঠ ধ্রুবক সাধারণত 0.01 mm বা 0.001 cm হয়, যা ভার্নিয়ার স্কেলের তুলনায় 10 গুণ বেশি সূক্ষ্ম।


আয়তনের পরিমাপ 

আয়তন পরিমাপক যন্ত্রগুলি প্রধানত তরল পদার্থের আয়তন বা কোনো অনিয়মিত কঠিন বস্তুর দ্বারা অপসারিত তরলের আয়তন মাপতে ব্যবহৃত হয়। এই যন্ত্রগুলি বিশেষত পরীক্ষাগারে বা বৈজ্ঞানিক কাজে নির্ভুল পরিমাপের জন্য অপরিহার্য।


1. মাপক চোঙ:


measuring-cylinder

তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপ করতে  চোঙ আকৃতির যে পাত্র ব্যবহার করা হয়, তাকে মাপক চোঙ বলে।

  • গঠন: এটি একটি সরু, লম্বা কাঁচের বা প্লাস্টিকের তৈরি নলাকার পাত্র, যার গায়ে মিলিমিটার (ml) বা ঘনসেন্টিমিটার এককে দাগ কাটা থাকে।
  • কার্যকারিতা: এটি অপেক্ষাকৃত অল্প পরিমাণে তরলের আয়তন পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত রসায়ন বা জীববিদ্যা পরীক্ষাগারে রাসায়নিক দ্রবণ প্রস্তুত করতে ব্যবহৃত হয়।
  • নির্ভুলতা: তরলের পৃষ্ঠতল দেখে এটিতে পরিমাপ নিতে হয়। তাই, এটিতে পরিমাপ একেবারে নির্ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম।

2. কঠিন পদার্থের আয়তনের পরিমাণ:

কঠিন বস্তুর আয়তন সরাসরি কোনো যন্ত্র দিয়ে মাপা যায় না। তাই, অনিয়মিত আকারের কঠিন বস্তুর আয়তন পরিমাপ করার জন্য জল অপসারণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

  • যন্ত্র: এক্ষেত্রে মূলত মাপক চং বা বিশেষ ইউরেকা ক্যান ব্যবহার করা হয়।
  • কার্যপ্রণালী: অনিয়মিত আকারের কঠিন বস্তুটি জলের মধ্যে ডুবিয়ে দিলে তা কিছু পরিমাণ জলকে অপসারণ করে। সেই অপসারিত জলের আয়তন পরিমাপের মাধ্যমেই কঠিন বস্তুটির আয়তন নির্ণয় করা হয়।


ভরের পরিমাপ 

বৈজ্ঞানিকভাবে ভর পরিমাপের প্রধান যন্ত্র হলো বিভিন্ন প্রকার তুলা যন্ত্র। এদের মধ্যে প্রধান দুই প্রকারের যন্ত্র নিচে দেওয়া হলো:


​1. সাধারণ তুলা:


balance

​ভরের তুলনামূলক পরিমাপের সবচেয়ে প্রাচীন ও সরলতম যন্ত্র হলো সাধারণ তুলা যন্ত্র। এটি বস্তুর ভর পরিমাপ করে।

  • নীতি: এই যন্ত্রটি যান্ত্রিক সাম্যাবস্থা বা ভারসাম্যের নীতি  অনুযায়ী কাজ করে। এর মূলনীতি হলো: যদি দুটি সমান ভরকে একটি সমান দৈর্ঘ্যের দণ্ডের দুই প্রান্তে রাখা হয়, তবে দণ্ডটি অনুভূমিকভাবে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
  • গঠন: ​এটি একটি উল্লম্ব স্তম্ভের উপর স্থাপিত একটি অনুভূমিক দণ্ড  নিয়ে গঠিত। ​দণ্ডের দুই প্রান্তে দুটি পাল্লা বা পাত্র ঝোলানো থাকে।
  • কার্যকারিতা: ​এক পাল্লায় অজানা ভরের বস্তুটি রাখা হয়। ​অন্য পাল্লায় বস্তুর ভরের সমান হতে পারে এমন প্রমাণ বাটখারা  রাখা হয়। ​যখন দণ্ডটি অনুভূমিকভাবে ভারসাম্য লাভ করে, তখন বাটখারার মোট ভরই বস্তুর ভর নির্দেশ করে।
  • ব্যবহার: সাধারণ দোকান গুলিতে এবং প্রাথমিক পরীক্ষাগারে এটি ব্যবহৃত হয়।

2. স্প্রিং তুলা:


spring-balance

​যদিও স্প্রিং তুলা ভরের পরিবর্তে ওজন পরিমাপ করে, তবুও এর স্কেলকে ভরের এককে ক্রমাঙ্কিত করে ভর নির্ণয় করা যায়।

  • নীতি: এটি হুকের সূত্র অনুযায়ী কাজ করে। হুকের সূত্র অনুসারে, স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে, একটি স্প্রিং-এর প্রসারণ তার উপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক।
  • কার্যকারিতা: বস্তুকে স্প্রিং-এর নিচের হুকে ঝোলালে ওজন, বস্তুর উপর প্রযুক্ত হয় এবং স্প্রিং-এর প্রসারণ ঘটে। এই প্রসারণ, স্কেলে নিউটন বা কিলোগ্রাম-এ পরিমাপ করা হয়।
  • অসুবিধা: যেহেতু ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণের উপর নির্ভরশীল, তাই পৃথিবী পৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানে অভিকর্ষজ ত্বরণের মানের পরিবর্তনের কারণে স্প্রিং তুলার পরিমাপে সামান্য পার্থক্য দেখা যেতে পারে।


সময়ের পরিমাপ

সময় হলো একটি মৌলিক ভৌত রাশি। সময় পরিমাপের একক হলো সেকেন্ড (s)। এটি পরিমাপের জন্য প্রাচীনকাল থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত নানা ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার দেখা যায়। এর মধ্যে কয়েকটি হলো:


​1. স্টপওয়াচ:


stopwatch

​বর্তমানে সাধারণত পরীক্ষামূলক কাজ এবং খেলাধুলার ইভেন্টে, সময় পরিমাপের জন্য এটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। স্টপওয়াচ দুই রকমের হয়ে থাকে। মেকানিক্যাল স্টপওয়াচ স্টপওয়াচ স্প্রিং এবং গিয়ার ব্যবস্থার মাধ্যমে কাজ করে। এর নির্ভুলতা 0.1 বা 0.2 সেকেন্ড পর্যন্ত হতে পারে। আর ​ডিজিটাল স্টপওয়াচ গুলি কোয়ার্টজ ক্রিস্টাল বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক উপাদান ব্যবহার করে কাজ করে। এর ডিসপ্লেতে সরাসরি সংখ্যায় সময় দেখায়। এর নির্ভুলতা অনেক বেশি, প্রায় 0.01 সেকেন্ড বা তারও কম হতে পারে।

  • কার্যকারিতা: এটি কোনো ঘটনার সময়কাল বা স্থায়িত্ব পরিমাপ করে। অর্থাৎ দুটি বিন্দুর মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান পরিমাপ করে, কিন্তু দিনের প্রকৃত সময় নির্দেশ করে না।
  • ব্যবহার: দৌড় প্রতিযোগিতা, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং রান্নার সময় মাপার মতো কাজে ব্যবহৃত হয়।

2. দেওয়াল ঘড়ি:

দেওয়াল ঘড়ি সাধারণত দেওয়ালে ঝোলানো হয় যাতে দূর থেকেও সহজে সময় দেখা যায়। এদের মূল কাজ হলো সময়ের ইঙ্গিত দেওয়া। দেওয়াল ঘড়ির গঠন ও কার্যকারিতা সময়ের সাথে সাথে যথেষ্ট পরিবর্তিত হয়েছে।

  • কার্যনীতি: এই ঘড়িগুলি সাধারণত ব্যাটারির সাহায্যে একটি ক্ষুদ্র কোয়ার্টজ ক্রিস্টাল অসিলেটর চালায়। কোয়ার্টজ ক্রিস্টালটি একটি অত্যন্ত স্থির কম্পাঙ্কে স্পন্দিত হয়। ফলে, ইলেকট্রনিক সার্কিটের মাধ্যমে কাঁটা ঘোরানোর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ ঘটে।
  • বিশেষত্ব: এটি সময় পরিমাপের জন্য অনেক বেশি নির্ভুল, নির্ভরযোগ্য এবং সস্তা একটি যন্ত্র।

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post