জৈন ধর্ম হল ভারতের অন্যতম প্রাচীন শ্রমণ ঐতিহ্য, যা 24 জন 'তীর্থঙ্কর' বা পথ-প্রদর্শক দ্বারা প্রচারিত। 24তম তীর্থঙ্কর মহাবীর হলেন এর শেষ প্রচারক। এই ধর্মের মূল ভিত্তি হল অহিংসা, অপরিগ্রহ বা ত্যাগ এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ। এটি ত্রিরত্ন অনুশীলনের মাধ্যমে মোক্ষ বা মুক্তি অর্জনের পথ দেখায়।
জৈন তীর্থঙ্করগণ
জৈন ঐতিহ্য অনুসারে, 24 জন তীর্থঙ্করের একটি নির্দিষ্ট ধারা রয়েছে। প্রতিটি তীর্থঙ্করের নিজস্ব প্রতীক বা চিহ্ন রয়েছে, যা তাদের পরিচয়কে আলাদা করে। 24 জন তীর্থঙ্কর হলেন:
| ক্রমিক সংখ্যা | তীর্থঙ্করের নাম | চিহ্ন বা প্রতীক | বংশ |
|---|---|---|---|
| 1 | ঋষভনাথ | ষাঁড় বা বৃষ | ইক্ষ্বাকু |
| 2 | অজিতনাথ | হস্তী বা হাতি | ইক্ষ্বাকু |
| 3 | সম্বলনাথ | ঘোড়া | হরি বংশ |
| 4 | অভিনন্দননাথ | বানর বা বাঁদর | ইক্ষ্বাকু |
| 5 | সুমতিনাথ | জলচর পক্ষী | ইক্ষ্বাকু |
| 6 | পদ্মপ্রভ | লাল পদ্ম ফুল | হরি বংশ |
| 7 | সুপার্শ্বনাথ | স্বস্তিক চিহ্ন | ইক্ষ্বাকু |
| 8 | চন্দ্রপ্রভ প্রভু | চন্দ্র বা চাঁদ | ইক্ষ্বাকু |
| 9 | সুবিধিনাথ | কুমির বা মকর | হরি বংশ |
| 10 | শীতলনাথ | শ্রীবৎস / শশন | ইক্ষ্বাকু |
| 11 | শ্রেয়াংসনাথ | গন্ডার | ইক্ষ্বাকু |
| 12 | বাসুপূজ্য | মহিষ | ইক্ষ্বাকু |
| 13 | বিমলনাথ | শূকর | হরি বংশ |
| 14 | অনন্তনাথ | বাজপাখি | ইক্ষ্বাকু |
| 15 | ধর্মনাথ | বজ্র | ইক্ষ্বাকু |
| 16 | শান্তিনাথ | হরিণ | ইক্ষ্বাকু |
| 17 | কুন্থুনাথ | ছাগল | ইক্ষ্বাকু |
| 18 | অরণাথ | মাছ | ইক্ষ্বাকু |
| 19 | মল্লিনাথ | জলের পাত্র | হরি বংশ |
| 20 | মুনিসুব্রত | কচ্ছপ | ইক্ষ্বাকু |
| 21 | নমিনাথ | নীল কমল | হরি বংশ |
| 22 | নেমিনাথ | শঙ্খ | যাদব |
| 23 | পার্শ্বনাথ | সাপ | ইক্ষ্বাকু |
| 24 | বর্ধমান মহাবীর | সিংহ | ইক্ষ্বাকু |
24তম তীর্থঙ্কর: মহাবীর
বর্ধমান মহাবীর ছিলেন জৈন ধর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রচারক ও সংস্কারক। তিনি গৌতম বুদ্ধের সমসাময়িক ছিলেন এবং তাঁর শিক্ষাই বর্তমান জৈন ধর্মের মূল ভিত্তি।
মহাবীরের জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি:
ঐতিহাসিকদের মতে, আনুমানিক 540 খ্রিস্টপূর্বাব্দে বৈশালীর কাছে কুন্দগ্রামে মহাবীর জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ছিলেন সিদ্ধার্থ, যিনি জ্ঞাতৃক নামে ক্ষত্রিয় বংশের প্রধান ছিলেন। মাতা ছিলেন ত্রিশলা, যিনি লিচ্ছবি প্রধান চেতকের ভগিনী ছিলেন। রাজকীয় সুখ-সুবিধার মধ্যে মহাবীরের শৈশব কাটে। তিনি যশোধা নামে এক নারীকে বিবাহ করেন এবং প্রিয়দর্শনা নামে এক কন্যার জন্ম দেন। মহাবীরের পিতৃদত্ত নাম ছিল বর্ধমান। 'কৈবল্য' বা দিব্যজ্ঞান লাভের পর তিনি 'মহাবীর' নামে পরিচিত হন।
জ্ঞান অনুসন্ধান ও কৈবল্য লাভ:
পিতামাতার মৃত্যুর পর, 30 বছর বয়সে মহাবীর জাগতিক সুখ ও সম্পদ ত্যাগ করে সন্ন্যাস জীবন গ্রহণ করেন। এরপর আধ্যাত্মিক সত্যের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন। পরবর্তী 12 বছর তিনি অত্যন্ত কঠোর তপস্যা করেন। এরপর 42 বছর বয়সে, বিহারের জৃম্ভিক গ্রামে ঋজুপালিকা নদীর তীরে একটি শাল গাছের নিচে তিনি 'কৈবল্য' বা দিব্য জ্ঞান লাভ করেন। এই জ্ঞান লাভের পর তিনি মহাবীর, জিন অর্থাৎ বিজয়ী এবং নির্গন্থ অর্থাৎ বন্ধনহীন নামে পরিচিত হন।
মহাবীরের মূল শিক্ষা ও দর্শন:
জ্ঞান লাভের পর, মহাবীর পরবর্তী ৩০ বছর ধরে দর্শন ও শিক্ষা প্রচার করেন।
- ত্রিরত্ন: মোক্ষ লাভের জন্য তিনি তিনটি নীতির উপর জোর দেন। নীতি গুলি হলো- সম্যক দর্শন অর্থাৎ সঠিক বিশ্বাস, সম্যক জ্ঞান অর্থাৎ সঠিক জ্ঞান, এবং সম্যক চরিত্র অর্থাৎ সঠিক আচরণ।
- পঞ্চ মহাব্রত: ২৩তম তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথের দেওয়া চারটি ব্রতের সাথে মহাবীর একটি পঞ্চম ব্রত যোগ করেন। ভিক্ষু-ভিক্ষুণীদের জন্য তিনি এই পাঁচটি ব্রত কঠোরভাবে পালনের নির্দেশ দেন। ব্রত গুলি হলো: 1)অহিংসা, 2)সত্য, 3)অস্তেয়, 4)অপরিগ্রহ ও 5)ব্রহ্মচর্য।
মহাপরিনির্বাণ:
অনেকের মতে, আনুমানিক 468 খ্রিস্টপূর্বাব্দে 72 বছর বয়সে মহাবীর বিহারের পাওয়া নগরীতে মোক্ষ লাভ করেন এবং দেহত্যাগ করেন। জৈন ধর্মাবলম্বীরা দিনটি বিশেষভাবে স্মরণ করে।
জৈন ধর্মের মূল দর্শন
জৈন দর্শনের মূল ভিত্তি হল কর্মবাদ এবং আত্মার মুক্তির জন্য কঠোর অনুশীলন।
1. ত্রিরত্ন:
মোক্ষ লাভের জন্য জৈন ধর্মাবলম্বীদের তিনটি নীতি অনুসরণ করতে হয়। নীতি গুলি হলো:
- সম্যক দর্শন: তীর্থঙ্করদের এবং জৈন ধর্মের মূল সত্যগুলির প্রতি সঠিক বিশ্বাস রাখা।
- সম্যক জ্ঞান: মহাবীর কর্তৃক প্রচারিত জৈন দর্শন সম্পর্কে সঠিক ও সংশয়হীন জ্ঞান অর্জন করা।
- সম্যক চরিত্র: পাঁচটি মহাব্রত কঠোরভাবে অনুসরণ করে জীবনযাপন করা।
2. পঞ্চমহাব্রত:
তীর্থঙ্করদের দেওয়া পাঁচটি মহাব্রত 'পঞ্চমহাব্রত' নামে পরিচিত। এই পাঁচটি মহাব্রত ভিক্ষু-ভিক্ষুণীরা কঠোরভাবে এবং গৃহস্থরা আংশিকভাবে পালন করেন। ব্রত গুলি হলো:
- অহিংসা: কোনো জীবন্ত প্রাণীকে (মানুষ, পশু, কীটপতঙ্গ) আঘাত না করা বা ক্ষতি না করা। এটি জৈন ধর্মের মূল নীতি এবং সর্বোচ্চ ব্রত।
- সত্য: সব সময় সত্যি কথা বলা।
- অস্তেয়: চুরি না করা বা অন্যের সম্পত্তি গ্রহণ না করা।
- অপরিগ্রহ: কোনো জাগতিক বস্তুর প্রতি আকর্ষণ বা আসক্তি না রাখা বা সম্পত্তি সঞ্চয় না করা।
- ব্রহ্মচর্য: ব্রহ্মচর্য বা কৌমার্য পালন করা। এই ব্রতটি মহাবীর যুক্ত করেন।
3. কর্মবাদ ও মোক্ষ
জৈন ধর্ম মতে, বিশ্ব সৃষ্টি বা পরিচালনার জন্য কোনো সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রয়োজন নেই। বিশ্ব চিরন্তন এবং কর্মের নীতি দ্বারা পরিচালিত। জীবের আত্মা অর্থাৎ জীব এবং জড় পদার্থ অর্থাৎ অজীব এই দুই ধরনের মৌলিক উপাদান দিয়ে বিশ্ব গঠিত। কর্ম হল এমন এক সূক্ষ্ম বস্তু, যা আত্মার সাথে লেগে থাকে এবং জন্ম-মৃত্যুর চক্রে সংসারকে আবদ্ধ করে। আর মোক্ষলাভ বা মুক্তি হল আত্মা থেকে সমস্ত কর্ম অপসারণ করে আত্মাকে তার মূল, বিশুদ্ধ ও সর্বোচ্চ অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।
জৈন ধর্মের বিভাজন
খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে জৈন ধর্ম শ্বেতাম্বর ও দিগম্বর নামে দুটি প্রধান শাখায় বিভক্ত হয়ে যায়।
শ্বেতাম্বর সম্প্রদায়:
'শ্বেতাম্বর' শব্দের অর্থ হল 'শ্বেত বসনধারী' বা 'সাদা পোশাকে আবৃত'। শ্বেতাম্বর সম্প্রদায়ের মূল বৈশিষ্ট্য গুলি হলো:
- পোশাক: এই সম্প্রদায়ের ভিক্ষু ও ভিক্ষুণীরা সাদা পোশাক পরিধান করেন। তাদের মতে, পোশাক পরিধান করা মোক্ষ লাভের পথে বাধা সৃষ্টি করে না, বরং আবহাওয়া বা সামাজিক কারণে এটা প্রয়োজনীয়।
- মোক্ষ ও নারী: তারা বিশ্বাস করেন যে নারীরাও পুরুষদের মতো সন্ন্যাস জীবন গ্রহণ করে মোক্ষ লাভ করতে পারেন।
- তীর্থঙ্করদের মূর্তি: শ্বেতাম্বর তীর্থঙ্করদের মূর্তি সাধারণত চোখে কাঁচের কাজ করা এবং অলংকৃত হয়। মূর্তির চোখ খোলা থাকে এবং কখনও কখনও তাঁদের গায়ে কাপড় পরা দেখা যায়।
- জ্ঞান লাভ: তাঁদের মতে, মোক্ষ লাভের পর তীর্থঙ্কররা সাধারণ মানুষের মতো আহার গ্রহণ করতেন।
- আদি শাস্ত্র: তারা তাদের মৌখিক উপদেশাবলির সংকলন আগামা (১২ অঙ্গ-সহ) সাহিত্যকে প্রামাণিক বলে স্বীকার করেন।
- প্রচলিত অঞ্চল: এই সম্প্রদায়টি প্রধানত পশ্চিম ভারতে বিশেষত, গুজরাট, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে বেশি প্রচলিত।
দিগম্বর সম্প্রদায়:
'দিগম্বর' শব্দের অর্থ হল 'দিক্ বা আকাশকে বসন মনেকারী'। অর্থাৎ, তাঁরা আকাশকেই তাঁদের পোশাক বা আচ্ছাদন বলে মনে করেন। দিগম্বর সম্প্রদায়ের মূল বৈশিষ্ট্য গুলি হলো:
- পোশাক: এই সম্প্রদায়ের ভিক্ষু-সন্ন্যাসীরা সম্পূর্ণ বস্ত্রহীন থাকেন। তাঁদের মতে, বস্তু মাত্রই হলো অপরিগ্রহের বা আসক্তিহীনতার পথে বাধা। একজন ভিক্ষুকে সব ধরনের জাগতিক বন্ধন ত্যাগ করতে হবে, যার মধ্যে পোশাকও অন্তর্ভুক্ত। তবে এই কঠোর নিয়ম শুধুমাত্র সাধুদের জন্য প্রযোজ্য। ভিক্ষুণীরা সাধারণত সাদা পোশাক পরিধান করেন।
- মোক্ষ ও নারী: তারা বিশ্বাস করেন যে নারীরা মোক্ষ লাভ করতে পারেন না। মোক্ষ লাভের জন্য একজন নারীকে পুরুষ হিসেবে পুনর্জন্ম নিতে হবে।
- তীর্থঙ্করদের মূর্তি: দিগম্বর তীর্থঙ্করদের মূর্তি সাধারণত বস্ত্রহীন, অলঙ্কারবিহীন হয়। মূর্তির চোখ বন্ধ অর্থাৎ ধ্যানরত অবস্থায় থাকে।
- জ্ঞান লাভ: তাঁদের মতে, 'কৈবল্য জ্ঞান' লাভের পর তীর্থঙ্কররা আহার গ্রহণ করতেন না।
- আদি শাস্ত্র: তারা বিশ্বাস করে যে মূল আগামা সাহিত্য বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাই তারা প্রাচীন আচার্যদের দ্বারা রচিত ভাষ্য ও গ্রন্থকে (যেমন ষট্খণ্ডাগম, কষায়পাহুড) প্রামাণিক হিসেবে অনুসরণ করে।
- প্রচলিত অঞ্চল: এই সম্প্রদায়টি প্রধানত দক্ষিণ ভারতে বিশেষত, কর্ণাটক এবং মহারাষ্ট্রে বেশি প্রচলিত।
জৈন সাহিত্য ও প্রধান ধর্মগ্রন্থ
জৈন সাহিত্যকে সাধারণত দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়: আগামা অর্থাৎ শাস্ত্রীয় বা ক্যানোনিকাল সাহিত্য এবং আগামেতর বা অ-শাস্ত্রীয় বা উত্তর-শাস্ত্রীয় সাহিত্য।
আগামা বা শাস্ত্রীয় সাহিত্য
আগামা হলো জৈন ধর্মের প্রধান এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। এটি মহাবীরের মৌখিক উপদেশসমূহের ভিত্তিতে সংকলিত হয়েছে। শ্বেতাম্বর সম্প্রদায় এই গ্রন্থগুলিকে প্রামাণ্য বলে মনে করে। দিগম্বর সম্প্রদায় বিশ্বাস করে যে মূল আগামাগুলি বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং তারা আচার্যদের দ্বারা রচিত ভাষ্য ও গ্রন্থগুলিকে প্রামাণ্য বলে মানে। আগামা সাহিত্য মূলত অর্ধমাগধী প্রাকৃত ভাষায় রচিত হয়েছিল। শ্বেতাম্বর মতে আগামা সাহিত্যের প্রধান ভাগ গুলি হলো:
- দ্বাদশ অঙ্গ: এগুলি হলো আগামা সাহিত্যের প্রধান অংশ। এতে মহাবীরের সরাসরি উপদেশ এবং জৈন দর্শন, নৈতিকতা, আইন ও কর্মের তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আয়ারাঙ্গ সুত্ত, যা ভিক্ষুদের আচরণবিধি নিয়ে গঠিত।
- দ্বাদশ উপাঙ্গ: দ্বাদশ উপঙ্গ হলো অঙ্গগুলির পরিপূরক। গুলিতে অঙ্গগুলির বিষয়বস্তুর বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে।
- দশম প্রকীর্ণক: এগুলিতে বিভিন্ন ছোটখাটো এবং বিবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যেমন মরণোত্তর আচার-অনুষ্ঠান ও স্তোত্র।
- ষষ্ঠ ছেদ সূত্র: এগুলি ভিক্ষু-ভিক্ষুণীদের জন্য কঠোর নিয়ম, শৃঙ্খলা এবং প্রায়শ্চিত্তের নিয়ম নিয়ে গঠিত।
- চতুর্থ মূল সূত্র: এর মধ্যে উত্তরধ্যয়ন সূত্র বিশেষভাবে পরিচিত, যা তরুণ সন্ন্যাসীদের জন্য নীতিশাস্ত্র এবং মৌলিক শিক্ষার সারাংশ রূপে কাজ করে।
- দ্বিতীয় চুলিকা সূত্র: এগুলি আগামা সাহিত্যের পরিশিষ্ট বা সংযোজনী অংশ।
আগামেতর বা অ-শাস্ত্রীয় সাহিত্য
এই সাহিত্যটি জৈন আচার্যদের নিজস্ব দর্শন, ভাষ্য, ইতিহাস এবং সাহিত্য রচনা নিয়ে গঠিত। দিগম্বর ও শ্বেতাম্বর উভয় সম্প্রদায়ই এই সাহিত্যকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। এই সাহিত্য মূলত সংস্কৃত, প্রাকৃত, অপভ্রংশ, তামিল, কন্নড় ইত্যাদি ভাষায় রচিত।
- ষট্খণ্ডাগম: এটি দিগম্বরদের প্রধান ধর্মগ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম।
- কষায়পাহুড: এটি কষায় অর্থাৎ ক্রোধ, অহংকার, মায়া, লোভ ইত্যাদি সম্পর্কিত শিক্ষা নিয়ে গঠিত।
- চার অনুযোগ: এতে দর্শন, ইতিহাস, ভূগোল এবং ধর্মীয় আচার সংক্রান্ত বিষয়বস্তু রয়েছে।
- রত্নকরণ্ড শ্রাবকাচার: এটি আচার্য সমন্তভদ্র কর্তৃক রচিত। এটিতে গৃহস্থদের জন্য আচরণবিধি ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
- সময়সার: এটি আচার্য কুন্দকুন্দ কর্তৃক রচিত। এটিতে জৈন দর্শনের গভীর আধ্যাত্মিক আলোচনা হয়েছে।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম ও লেখক:
- কল্পসূত্র: শ্বেতাম্বর ঐতিহ্যের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থ। এটি ভদ্রবাহু কর্তৃক রচিত এবং তীর্থঙ্করদের (বিশেষত মহাবীর ও পার্শ্বনাথ) জীবনী ও মহাপরিনির্বাণের কথা বর্ণনা করে। শ্বেতাম্বররা পর্যূষণ উৎসবের সময় এটি পাঠ করে।
- সিদ্ধসেন দিওয়াকর: প্রথম জৈন আচার্য যিনি সংস্কৃত ভাষায় জৈন গ্রন্থ রচনা শুরু করেন।
- হেমচন্দ্র: জৈনদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পণ্ডিত হলেন হেমচন্দ্র। তিনি বহু গ্রন্থ রচনা করেন, যার মধ্যে ত্রিষষ্ঠিশালাকা পুরুষ চরিত্র বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এটিতে 63 জন বিখ্যাত ব্যক্তির জীবনী তুলে ধরা হয়েছে।
